বীর ওসমান হাদি-হাদির মৃত্যু নয়, জন্ম নিল এক অমর প্রতিবাদ
নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকাঃ
ওসমান হাদি—এই নামটি এখন আর কেবল একজন ব্যক্তির পরিচয় নয়; এটি হয়ে উঠেছে প্রতিবাদ, সাহস ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর এক প্রতীক। আজ তাঁর প্রস্থান আমাদের চোখে জল এনেছে ঠিকই, কিন্তু তাঁকে বিদায় জানানোর জন্য আমরা সমবেত হইনি। আমরা এসেছি তাঁর আদর্শকে বুকে ধারণ করতে, তাঁর লড়াইকে সামনে এগিয়ে নিতে।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান হাদি ছিলেন সময়ের এক নির্ভীক কণ্ঠস্বর। রাষ্ট্র, সমাজ কিংবা ক্ষমতার যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন আপসহীন। নিজের নিরাপত্তা কিংবা ব্যক্তিগত স্বার্থকে কখনোই তিনি অগ্রাধিকার দেননি। বরং সাধারণ মানুষের অধিকার, গণতন্ত্র ও ন্যায়ের প্রশ্নেই তাঁর অবস্থান ছিল দৃঢ়।
রাজনীতির মাঠে ওসমান হাদি ছিলেন স্পষ্টভাষী। তাঁর বক্তব্যে যেমন ছিল যুক্তি, তেমনি ছিল সাহস। তরুণ সমাজের বড় একটি অংশ তাঁকে অনুসরণ করত এই কারণে যে তিনি কথা বলতেন চোখে চোখ রেখে, ভয়কে উপেক্ষা করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে লড়াইয়ের সময়টুকুতেও মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিল—হাদি ফিরবেন, আবার কথা বলবেন, আবার রাস্তায় দাঁড়াবেন।
কিন্তু তাঁর চলে যাওয়া আমাদের সামনে এক নির্মম বাস্তবতা হাজির করেছে। এই মৃত্যু শুধু একজন নেতার নয়, এটি এক স্বপ্নবাজ প্রজন্মের ক্ষত। তাঁর পরিবার যেমন আপন মানুষকে হারিয়েছে, তেমনি দেশ হারিয়েছে এক স্পষ্ট কণ্ঠ, সমাজ হারিয়েছে এক প্রতিবাদী চেতনা।
আজ তাঁর মরদেহকে ঘিরে মানুষের নীরবতা, অশ্রু আর স্লোগান একটাই কথা বলছে—ওসমান হাদি একা ছিলেন না। তিনি ছিলেন মানুষের সঙ্গে, মানুষের ভেতরে। তাঁর লড়াই ছিল আমাদের লড়াই, তাঁর স্বপ্ন ছিল ন্যায়ের বাংলাদেশ।
ওসমান হাদি বিশ্বাস করতেন, মানুষ হার মানে তখনই, যখন সে চুপ করে যায়। তিনি কখনো চুপ করেননি। সেই কারণেই তিনি আজও বেঁচে আছেন মানুষের স্মৃতিতে, মানুষের কথায়, মানুষের বুকের গভীরে।
বীর ওসমান হাদি, আমরা তোমাকে বিদায় দিতে আসিনি। তুমি রয়ে যাবে সব বাংলাদেশির বুকের মধ্যে—প্রশ্ন হয়ে, সাহস হয়ে, অমর প্রতিবাদ হয়ে।

কোন মন্তব্য নেই